নীলফামারী প্রতিনিধি
৩১ জানুয়ারী ২০২৫, ৩:৩৬ অপরাহ্ন
অনলাইন সংস্করণ

নীলফামারী সাব-রেজিষ্টার অফিসে দলিল সম্পাদনায় গুণতে হয় বাড়তি টাকা

নীলফামারী সদর উপজেলার সাব-রেজিস্ট্রি অফিস নিয়ে অভিযোগের অন্ত নেই। ঘুষ, অনিয়ম ও দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়েছে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ এই কার্যালয়টি। এখানে যে কোনো কাজ করাতে হলে আগে টাকা গুনতে হয়। টাকা দিলে সব অনিয়মই এখানে নিয়মে পরিণত হয়। আর এর মূলহোতা দলিল লেখক সমিতির নেতারা। সম্প্রতি অনিয়মের আখড়া জানাজানি হলে কমিটি ভেঙে দিয়ে আহ্বায়ক কমিটি দেয়া হয়। তবে আহ্বায়কদের ছত্রছায়ায় আছে সাবেক কমিটির নেতারা। তাদের নির্দেশনায় চলছে বর্তমান কমিটি।
জানা যায়, দলিল লেখক সমিতির আহ্বায়ক আমজাদ হোসেন ও সদস্য হিসেবে আছে আফতাব হোসেন, জিয়াউর রহমান, গোলাম মোস্তফা লিটন ও জামিউল ইসলাম,আলমগীর হোসেন। যাদের সিংহভাগই চলে সাবেক সভাপতি মো. আব্দুল্লাহ’এর নির্দেশে। তাদের হাত ধরেই তিনি আবারও আসতে চান মূল কমিটিতে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন দলিল লেখক জানান,ডিসিফি, স্ট্যাম্প সুল্ক, উৎস কর, অফিস খরচসহ নানা জায়গায় প্রতি লাখে গুনতে হয় বাড়তি টাকা। আর টাকা নিয়ে সুবিধাভোগীদের দেয়া হয়না কোন প্রকার খরচের ভাউচার। এছাড়াও মৌজা ভিত্তিক, দোলা,ভিটা, বসত-বাড়ি, ডাঙ্গা, ডোবা, পতিত এমনকি বাণিজ্যিক শ্রেণীর জমির ধরণ পরিবর্তণ করে রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে কোটি কোটি টাকা। তবে এই সবে সাব-রেজিষ্টারের সাথে যোগসাজসের অভিযোগ রয়েছে।
অফিসের একজন দলিল লেখক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, নীলফামারী সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে ঘুষ ছাড়া কোনো কাজই হয় না। কোনো কারণে যদি দিনের বেলা দলিল না হয়, ঘুষ দিলে রাতেই দলিল হয়ে যায়।
দলিল লেখক সমিতির আহ্বায়ক আমজাদ হোসেন বলেন, গত ডিসেম্বরের পর থেকে এডহক কমিটির আহ্বায়ক হিসিবে আছি। এখন আমরা তো তেমন বেতন পাই না, মানুষ যেভাবে দেয় সেইভাবে নেই। এছাড়া একসাথে সরকারি করি সকলের সাথে শলাপরামর্শ করে চলতে হয়।
এ ব্যাপারে দলিল লেখক সমিতির সাবেক সভাপতি আব্দুল্লাহ্ বলেন, সরকার আমাদের কাছে ভ্যাট বছরে ২টাকা হলেও ভ্যাট নেয়। কিন্তু সরকার আমাদেরকে কিছু দেয় না। লাইসেন্সের বিনিময়ে আমাদের ক্ষমতা দিয়েছে। আমি দলিল লেখে পারিশ্রমিক নেই। একসময়ে ওয়ার্ড ভিত্তিক পারিশ্রমিক নিতাম। কিন্তু ঢাকায় আন্দোলনের মুখে আমরা পরিশ্রমিকের সংখ্যা উল্লেখ করেছিলাম। কিন্তু তৎকালীন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছিলেন, এতে তোমাদের লজ হবে। তাই যাদের টাকা আছে তারাই তো জমি কিনে। এই টাকার সংখ্যা নির্ধারিত না রাখলে দেখবা অনেক টাকা উপার্জন হবে। এছাড়াও তিনি বলেন, আমাদের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ করা হয়েছে, মানুষ আমাদের কে খুশি করে টাকা দেয়।
এ ব্যাপারে সদর উপজেলা সাব-রেজিস্টার আব্দুল্লাহ আল মাসুম বলেন, অভিযোগের ভিত্তিতে কিছু কিছু বিষয় সমাধান করতে হয়। এখানে নানা ধরণের মানুষ আসা যাওয়া করে। তাদের সমস্যার সমাধান করতে গিয়ে দিন পার হয়ে যায়। আর আমার জানা মতে, নীলফামারী দলিল লেখক সমিতির কনো রকম এডহক কমিটি হয় নাই এখন পযন্ত । এতে যদি কনো সরকার আমার দিকে অভিযোগের তীর ছূরে মারে তাহলে আমার কিছুই করার নেই। কনো সরকার যদি ভুল করে তাহলে আমি ব্যবস্তা নিবো।

Facebook Comments Box

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপকূলীয় ৫০০ পরিবারে পাশে দাঁড়ালো দোস্ত এইড

গাইবান্ধা পলাশবাড়ী উপজেলা হাসবাড়ী বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে নিরাপত্তা পরিস্থিতি পর্যালোচনা শীর্ষক কর্মশালা

পঞ্চগড় জেলা ছাত্রদলের উদ্যোগে বিশুদ্ধ পানি ও স্যালাইন বিতরণ

নীলফামারীতে ১৮তম বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবস উদযাপন উপলক্ষ্যে র‍্যালি ও আলোচনা সভা

কাউনিয়ায় জনপ্রিয় অতন্দ্র জরিপ’ পদ্ধতি

‘মাদার তেরেসা গোল্ডেন অ্যাওয়ার্ড ২০২৫’ পদকে ভূষিত হলেন আব্দুল মোমিন

‘নীলফামারীতে হবে চীন সরকারের হাসপাতাল’

সংস্কার ছাড়া কোনো নির্বাচন হবে না জলঢাকায় জনসভায় জামায়াতের আমীর ডা. শফিকুর রহমান

নীলফামারীতে সাংবাদিকদের সাথে জেলা জামায়াতে ইসলামীর মতবিনিময় সভা

নীলফামারীতে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম কেন্দ্রীয় কমিটির সাথে মতবিনিময়

১০

হারানো বিজ্ঞপ্তি

১১

ইসলামপুরে ৫০০ পরিবারের মাঝে ফুড প্যাকেট বিতরণ

১২

দোস্ত এইড এর উদ্যোগে দুস্থ পরিবারের মাঝে খানসামায় বিনামূল্যে টিউবওয়েল বিতরন

১৩

নীলফামারীতে নিষিদ্ধ ঘোষিত হাইড্রোলিক হর্ণ যানবাহনে পরিবেশ অধিদপ্তরের ভ্রাম্যমাণে অভিযান

১৪

নেতানিয়াহু ইসরায়েলের শত্রু, তাকে বন্দি করা উচিত: সাবেক সেনাপ্রধান

১৫

চীনা প্রকল্পের ১০০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল কেন নীলফামারীতেই হওয়া উচিত?

১৬

রংপুরের কাউনিয়ায় নববর্ষের বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা

১৭

কাউনিয়ায় বাংলা নববর্ষকে স্বাগত জানিয়ে বিএনপির আনন্দ শোভাযাত্রা

১৮

উৎসবের আমেজে বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা

১৯

৮ মাস পরও বিদ্যুৎ বিলে শেখ হাসিনার স্লোগান

২০