আমি যখন মসজিদে নামাজে দাঁড়াই, তখন আমার পাশে কেউ দাড়াতে চায় না। আমি রিস্কায় উঠলে আমার পাশে কেউ বসে না। আমার সঙ্গে কেউ খেতে চায় না। এমনকি আমার সন্তানেরাও আমার প্লেট, গ্লাস ব্যাবহার করতে ভয় পেতো। আমার ছেলেমেয়ের সঙ্গে কেউ বিয়ে দিতে চায় না। এসব কথা বলতে বলতে চোখের কোনে থেকে জল গড়িয়ে পরছিল মধ্যো বয়সি কুষ্ঠ রোগী সোলেমান আলীর। এখন তিনি সম্পূর্ণ সুস্থ। তারপরও সমাজের লোকজন তাকে বাঁকা চোখেই দেখেন। তবুও তিনি থেকে নেই। কাজ করে যাচ্ছেন মানুষের সচেতনতার জন্য।
আর যেন কোনো কুষ্ঠ রোগী তার মত করে কাউকে হেও হতে না হয়। তিনি যখন কুষ্ঠ রোগে আক্রান্ত হন অনেক চিকিৎসককে রোগটি নির্নয় করতে পারে নি। তাই অনেক ভোগান্তি ও অর্থ ব্যায় হয়েছে। এরকম ভোগান্তির স্বীকার হয়েছেন প্রতাপ মহন্ত। তার বাম হাতে প্রচন্ড যন্ত্রণা ছিল অনেক চিকিৎসা করে ফল পাইনি। রংপরে একজন ডাক্তারের কাছে এক বছর চিকিৎসা করেছি পরে তিনি ঢাকায় পাঠিয়ে দেন এবং ঢাকার ডাক্তার ভারতে গিয়ে চিকিৎসা করতে বলেন। পরে আমি নীলফামারী ড্যানিসে গিয়ে জানতে পারি আমি কুষ্ঠ রোগে আক্রান্ত। ওখানে চিকিৎসা করে আমি সুস্থ জীবন যাপন করছি। এসব কথা ভুক্তভোগীরা জানালেন কুষ্ঠ দিবসের আলোচনা সভায়। উপজেলা স্বাস্থ্য প,প কর্মকর্তা ডাঃ আবু হাসান মোঃ রেজওয়ানুল কবীর বলেন এই রোগের লক্ষণ, শরীরে অনুভূতিহীন দাগ, মুখমন্ডলে ও শরীরে দানা বা গুটি, কানের লতি মোটা ইত্যাদি। সঠিক সময়ে চিকিৎসা নিলে সম্পূর্ণ সুস্থ হওয়া সম্ভব। হাচি, কাসি, জীবাণু দ্বারা সংক্রমণ হয় এ রোগের।
নীলফামারী জলঢাকায় ” ঐক্যবদ্ধ কাজ করি, কুষ্ঠমুক্ত দেশ গড়ি” এই স্লোগান নিয়ে পালিত হলো ৭২ তম বিশ্ব কুষ্ঠ দিবস । রবিবার দুপুরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আয়োজনে ও সুবর্ণ নাগরিক উন্নয়ন সংস্হা অংশগ্রহণে এ উপলক্ষ্যে র্যালী এবং আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হল রুমে সুবর্ণ নাগরিক উন্নয়ন সংস্হার সভাপতি পরিমল রায়ের সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন আবাসিক মেডিকেল অফিসার মেসবাহুর রহমান, কুষ্ঠ ও যক্ষ্মা নিয়ক্রক বাবুল হোসেন, আর এইচপি ল্যাম্ব হরে কৃষ্ণ রায়, সুবর্ণ নাগরিক সস্হার সাধারণ সম্পাদক পরেশ চন্দ্র রায়, সদস্য সামসুল হক প্রমূখ।
মন্তব্য করুন