বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) দিনাজপুর বীজ বিপনন অঞ্চলের সহকারী প্রশাসিনক কর্মকর্তা মাহবুবা বেগম কৃষকদের সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানটিকে ব্যাক্তিগত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বানিয়ে বুনে গেছেন কোটি কোটি টাকার মালিক। তিনি কৃষকদের বীজ সংকট দেখিয়ে ১৮ বছর যাবত হাতিয়ে নিচ্ছেন লক্ষ লক্ষ টাকা। সেদিকে কোন প্রকার নজরদারী নেই বিএডিসির উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের।
মাহবুবা বেগম বিগত আওয়ামীলীগ সরকার আমলে ক্ষমতার প্রভাব দেখিয়ে কম্পিউটার অপারেটর থেকে সহকারী প্রশাসনিক কর্মকর্তা হয়েছেন। তিনি ২০০৬ সালে চাকুরির শুরু থেকে একই দপ্তরে টানা ১৮ বছর চাকুরী করায় নিজের স্বামী আব্দুল কুদ্দুস, বড় ভাই মতিউর রহমান, ছোট ভাই মিজানুর রহমান, ভাবি শাহনাজ বেগম, মওদুদ হাসান (দুঃসম্পর্কে ভাগনে), সহ পরিবারের স্বজনদের নামে রয়েছে ৭ টি বিএডিসি’র বীজ ডিলারশীপ লাইসেন্স। ভুয়া ডিলার লাইসেন্স প্রদান ও ডিলারশীপ নবায়নে মোটা অংকের অর্থ আদায়সহ নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। আর এই অভিযোগের বিষয়ে মাহবুবা বেগমের সাথে কথা বলতে গেলে তিনি সকল অভিযোগ হেসে উড়িয়ে দেন। বলেন উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা আমার বদলী না করালে আমার কি করনীয়।
অলৌকিক শক্তির জোরে ওই দপ্তরের সহকারী প্রশাসনিক কর্মকর্তা মাহবুবা বেগম চাকুরির শুরু থেকে ১৮ বছর ধরে একই স্থানে থেকে রামরাজত্ব করার অভিযোগ উঠেছে। এক সময় আওয়ীলীগের মন্ত্রী-এমপিদের নাম ভাঙ্গিয়ে রামরাজত্ব করলেও এখন বিএনপি’র পরিচয় দিচ্ছেন তিনি। তার ইশারায় সবকিছুই ঘটছে দপ্তরে। অবৈধভাবে উপার্জন করেছেন কোটি টাকা। গড়েছেন বহুতল আলিশান বাড়ি, গাড়ি, নামে-বেনামে ব্যাংক ব্যালেন্সসহ অঢেল সম্পদ। আওয়ীলীগ শাসনামলে তিনি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাতিজা ও আওয়ীলীগ এর কেন্দ্রীয় নেতা শেখ ফজলে নূর তাপস এর নাম ভাঙ্গিয়ে চলতেন। এছাড়াও দিনাজপুরের সাবেক মন্ত্রী মরহুম এ্যাড. মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার, সাবেক হুইপ ইকবালুর রহিম ও সাবেক এমপি শিবলী সাদিকের সঙ্গেও ছিলো তার বেশ সখ্যতা। কোন শক্ত খুটির জোরে ডিলার, কৃষক, কর্মচারি-কর্মকর্তা থেকে শুরু করে বসদেরও জিম্মি করে রেখেছেন মোছাঃ মাহবুবা বেগম।
দিনাজপুরের হাকিমপুর উপজেলার এক দরিদ্র পরিবারের সন্তান মাহবুবা বেগমের বিয়ে হয় দিনাজপুর পৌর এলাকার উপশহরে। এখন থাকেন শহরের ঈদগাহ আবাসিক এলাকায়। অবৈধ অর্থ উপার্জনে তার এখন কোটি কোটি টাকার সম্পদ রয়েছে। বিলাস বহুল বহুতল বাড়ি, গাড়ি, বিপুল ব্যাংক ব্যালেন্সসহ অঢেল সম্পাদের মালিক তিনি। বিলাস বহুল আলিশান বাড়িতে একটি সু প্রতিষ্ঠান এনজিও সহ বেশ কয়েকটি ভাড়াটিয়া রয়েছে।
বিএডিসি দিনাজপুর অঞ্চলের নিয়োগ প্রাপ্ত কম্পিউটার অপারেটর মাহবুবা বেগম আওয়ীলীগ শাসনামলে একই দপ্তরে চারটি পদের চেয়ার নিজ দখলে রেখে অবৈধভাবে উপার্যন করেছেন কোটি কোটি টাকা। সেময় তার বিরুদ্ধে কেউ কোন কথা বলার বা প্রতিবাদ করার সাহস পাননি।
কম্পিউটার অপারেটর, সহকারী প্রশাসনিক কর্মকর্তা, গুদাম রক্ষক ও হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করেন তিনি। নীতিমালা উপেক্ষা করে নিয়মববহির্ভূত অসংখ্য স্বনামে-বেনামে বীজ ডিলারশীপ তৈরি তার হাতেই। অনেক ডিলারদের নেই নিজস্ব গুদাম,নেই দোকান বা যে স্থানের ডিলারশীপ লাইসেন্স আছে সেই স্থানে অস্তিত্ব নেই, আছে অন্য স্থানে দোকান।
এ বিষয়ে বিএডিসি দিনাজপুর অঞ্চলের উপ-পরিচালক আব্দুর রশিদের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলে ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
এ ব্যাপারে মাহবুবা বেগমের সাথে কথা হলে তিনি হাঁসি মুখে বলেন, উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা আমাকে বদলী না করলে আমার কি করার আছে? উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা আমাকে রেখে বলেই আমি এখন পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করছি। একই স্থানে থাকতে কোন প্রকার তদবির করেছেন কি না তা জানতে চাইলে সে বিষয় তিনি কোন মন্তব্য করতে রাজি নন বলে সাফ জানিয়ে দেন।
মন্তব্য করুন