রাজশাহীর কুমারপাড়া এলাকায় আজ শুক্রবার সকালে রিকশায় বসেছিলেন চালক আবদুল জব্বার। রোদের আলো উঠলেও তাঁর গায়ে ছিল মোটা গরম কাপড় আর মাথায় মোড়ানো মাফলার। তিনি বলছিলেন, “রোদ উঠেছে, কিন্তু ঠান্ডা বাতাস রোদের তেজ কমিয়ে দিচ্ছে। এই রোদ না থাকলে আরও শীত পড়ত।”
রাজশাহীতে শৈত্যপ্রবাহ
আজ রাজশাহী জেলায় মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বইছে। সকালে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আবহাওয়াবিদদের মতে, সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৮.১ থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে সেটি মৃদু শৈত্যপ্রবাহ হিসেবে ধরা হয়।
আজ দেশের ১৩টি জেলায় শৈত্যপ্রবাহ শুরু হয়েছে, যার মধ্যে রাজশাহী, পাবনা, বগুড়া, নওগাঁ, কুষ্টিয়া এবং রংপুর বিভাগের সব জেলাগুলো উল্লেখযোগ্য। রাজধানী ঢাকাসহ দেশের অন্যান্য এলাকাতেও শীতের প্রকোপ ছিল তীব্র।
রাজধানীতে শীতের চিত্র
ঢাকায় গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে সূর্যের দেখা মেলেনি। আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, আজ রাজধানীর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ১৭.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অথচ ৩০ ডিসেম্বর ছিল ২৮.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তাপমাত্রার এই পতনের কারণে শীতের তীব্রতা বেড়েছে। আগামীকালও ঢাকায় কুয়াশা থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। আবহাওয়াবিদ মো. বজলুর রশীদ জানিয়েছেন, তাপমাত্রা কিছুটা বাড়লেও ঘন কুয়াশা কাটতে আরও তিন দিন লাগবে।
শীতের কারণে দুর্ভোগ
শীতের তীব্রতায় নিম্ন আয়ের মানুষেরা সবচেয়ে বেশি বিপর্যস্ত। কাজের সন্ধানে বাইরে বের হতে গিয়ে তাঁরা ঠান্ডা বাতাসের সঙ্গে লড়ছেন। ঘন কুয়াশার কারণে যান চলাচলেও বিঘ্ন ঘটেছে।
শীতজনিত রোগের প্রকোপে হাসপাতাল ও চিকিৎসাকেন্দ্রগুলোতে রোগীর ভিড় বেড়েছে। বিশেষ করে বাচ্চা ও বয়স্করা এই ঠান্ডায় বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন।
উপকূলীয় অঞ্চলে তাপমাত্রা তুলনামূলক বেশি
দেশের অন্যান্য স্থানে তাপমাত্রা ১৫ ডিগ্রির নিচে থাকলেও কক্সবাজার ও কুতুবদিয়া এলাকায় তা ১৭ ও ১৬.২ ডিগ্রির মধ্যে রেকর্ড করা হয়েছে।
সামনের দিনগুলোতে শীতের পূর্বাভাস
আবহাওয়া অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, শীতের এই তীব্রতা আরও কয়েকদিন থাকতে পারে। তবে আগামীকাল থেকে তাপমাত্রা কিছুটা বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে কুয়াশার কারণে দিন ও রাতের তাপমাত্রার পার্থক্য কম থাকায় শীতের অনুভূতি বজায় থাকবে।
জনজীবনে শীতের এই অস্বস্তি মোকাবিলায় সবার প্রস্তুতি এবং সচেতনতা অত্যন্ত জরুরি।
মন্তব্য করুন